Friday, December 20, 2019

সাপ সম্পর্কে আশ্চর্যজনক অজানা তথ্যবলী।

বীন বাজালে সিনেমায় সাপ নাচে। বাস্তবে নাচে না। সাপের কান নাই। শোনার জন্য ঘনঘন জিহ্বা বের করতে হয়।

সাপ আপনাকে আক্রমণ করবে না। আপনি যদি শব্দ করে হাঁটেন, সে বুঝতে পারে। সাপের বুকের তলায় খোলসের রঙ আলাদা। সেখানে বিশেষ স্নায়ুতন্তু থাকে। মাটির কম্পন বোঝার জন্য। আপনি কতদুরে আছেন, আপনি সাইজে কতবড়, কম্পন দেখেই সে বুঝতে পারে। পালিয়ে যায়।

বেলি, হাস্নাহেনার গন্ধে কখনো সাপ আসে না। কেউকেউ জীবদ্দশায় বেলি, হাস্নাহেনা গন্ধরাজের তলায় সাপ দেখেছেন হয়তো। মনে রাখবেন, সাপের ঘ্রাণশক্তি খুবই দূর্বল। সে গন্ধ পায় না।
সুগন্ধি ফুলে পোকামাকড় আকৃষ্ট হয় বেশি। পোকা খেতে ব্যাঙ আসে। ব্যাঙ খেতে মাঝেমাঝে সাপ আসতে পারে। খাবার পর মানুষের মত সাপও ক্লান্ত হয়। মানুষ খাবারের পর যেমন আয়েশ করে ঘুমায় তেমনই সাপও বেলি-হাস্নাহেনার তলায় ঘুমুতে পারে। তবে এসব গাছ যদি বাড়ির ভেতর থাকে তবে সাপ কম আসে। কারণ মানুষের উপস্থিতি তারা ভয় পায়। তবে বাড়ির সাইডে, ঝোপঝাড়ে এমন গাছ থাকলে সাপ আসা স্বাভাবিক।

একটা সাপকে মারলে তার জোড়া সঙ্গী কখনোই আপনাকে খুঁজে দংশন করতে আসবে না। সাপের স্মৃতিশক্তি খুবই দূর্বল। সাপ বাংলা সিনেমার স্বর্পরাজ শাকিব খান কিংবা নাগিন মুনমুন নয়
 যে সঙ্গীহারার প্রতিশোধ নিতে ছুটে আসবে। সাপ নিম্নজাতের প্রাণি। এদের মধ্যে রিভেঞ্জ বলে কিছু নাই।
কিন্তু একটা সাপ মারার পর আরেকটা সাপ প্রায়ই একই স্থানে দেখা যায়, কারণ কী?
সিম্পল। মেটিং এর সময় তাদের পার্টনার আশেপাশে থাকতেই পারে কিংবা আশেপাশে গর্ত থাকলে তার বাচ্চাকাচ্চা কিংবা আরো সাপ উঠে আসতেই পারে। সে প্রতিশোধ নিতে আসেনি বরং ভুল করে গর্ত থেকে চলে এসেছে।

ছোট সাপের বিষ নাই। কথাটা ভুল। সাপের বাচ্চাও সাপ। কেঁচোর সমান একটা কেউটের কামড়ে আমার চোখের সামনে এক রোগীকে টানা ২৪ ঘণ্টা জীবনের সাথে ফাইট করতে হয়েছে। আইসিইউতে আমরা তিন ডাক্তার তার পাশে ২৪ ঘন্টা লড়েছিলাম। আর্টিফিশিয়াল ভেন্টিলেশন থেকে শুরু করে একাধিকবার অ্যান্টি-ভেনম দিয়েছি। সে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গেছে। যাবার আগে আমাদের গালিগালাজ করে গেছে। আমরা নাকি তাকে অনেক দামী ঔষুধ দিয়েছি। সে জানে না, একডোজ অ্যান্টিভেনমের দাম ১০ হাজার টাকা। লজিক্যালি লোকটার দোষ নেই। সে ছিল জেলে। দিনে হয়তো এক দেড়শ টাকা তার ইনকাম।
রাতে যারা বাজার থেকে অন্ধকারে ঘরে ফেরে তাদের এবং জেলেদের সাপ বেশি কাটে।
জেলেরা বর্ষায় রাতে আইলে, নদীর কিনারে হেঁটে হেঁটে বড়শি ফেলে, জাল ফেলে মাছ ধরে। নদী বা নালায় রাতে জাল পেতে দাঁড়িয়ে থাকে। সাপ আইল, নদীর কিনারা, পাড়কে শুকনো ভেবে সেখানে আশ্রয় নেয়। ফলে পায়ের নিচে পড়লে কিংবা সাপ নিজে ভয় পেলে কামড় দেয়।

সিনেমা বলে, সাপ দুধ খায়। গরুর দুধ খেতে গোলাঘরে হানা দেয়। ভুল কথা। এসব সাপ ক্ষেতের ব্যাঙ- পোকামাকড় খায়। কালো রঙ্গের দাড়াশ সাপ দেখি, এরা আমাদের উপকার করে। ফসল বাঁচায়। এদের না মারা উত্তম।

সাপে কাটলে ব্লেড দিয়ে কেটে দিলে বিষ বের হয়ে যায়। কথাটা ভুল। ভুলেও এই কাজ করবেন না। ব্লেড দিয়ে কাটলেন তো বিষকে রক্তের সাথে নিজহাতে মিশিয়ে দিলেন।

দংশন করা সাপকে উল্টোকামড় দিলে বিষ ফেরত চলে যায় সাপের ভেতরে। কথাটা ভুল। পায়ে কাটলে বিষ সেখানে। আপনার মুখের দাঁতে তো বিষ নাই। কীভাবে ফেরত দিবেন?
সাপের বিষ তার দাঁতে থাকে না। সে যখন কামড় দেয় তার মুখের পেশিগুলো টানটান হয়ে যায়। দাঁতের কাছেই ঠাকে বিষধর। সেখান থেকে বিষ দাঁত বেয়ে আপনার শরীরে প্রবেশ করে।

শক্ত করে বাঁধলে বিষ ছড়াতে পারে না এমন ধারনা ভুলে যান। আপনি নিজেও নিশ্চিত না সাপটা বিষধর ছিল কি না, তাহলে শক্ত করে বাঁধবেন কেন?
অনেক ডাক্তার সাপে কাটার পর বাঁধতে নিষেধও করেন। কারণ এতে হিতে বিপরীত হয়।
ফুটবলের অ্যাংলেট পায়ে দিলে যেমন আটসাট হয়ে থাকে এমন ভাবে গামছা বা শার্ট বা শাড়ি দিয়ে দংশনের কিছু উপরে পেঁচিয়ে নিতে পারেন। বাঁধন অবশ্যই ঢিলা রাখবেন। দুট আঙ্গুল ঢোকে এমনভাবে ঢিলা করবেন। আবার খুব ঢিলাও না। ২০ মিনিট পরপর খুলে আবার লাগাতে পারেন। ভুলেও লোহার তার, সুতলি, কারেন্টের তার বা অন্য সরু জিনিস দিয়ে বাঁধবেন না। বাঁধলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে হাতে-পায়ে পঁচন শুরু হবে। চিরতরে হাত বা পা খোয়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। হয়তো আপনাকে বিষধর সাপ কাটেই নি অথচ আপনি ভয়ে গিট্টু দিয়ে হাত পা পঁচিয়ে পঙ্গু হয়ে গেলেন। কেমন হবে?

সাপ কাটলে কিন্তু আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট খুলে ফেলবেন। কিছু সাপের বিষে আপনার আঙ্গুল, হাত বা পা ফুলে যেতে পারে। আংটি বা চুড়ি থাকলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে পঁচন ঘটতে পারে।

সাপ কখন দংশন করে?

১। যদি ভুলে আপনার মুখোমুখি হয় সে পালাতে চেষ্টা করে। কিন্তু সে নিজে ভয় পেলে হিংস্র হয়। সব প্রাণিই এমন। মুরগীরও মাঝেমাঝে মানুষকে ঠোকর দেয়। সামনে সাপ পড়লে তাকে চলে যেতে দিন।

২। বর্ষাকাল মানেই হাসপাতালে সাপে কাটা রোগী। বর্ষায় গর্তে পানি উঠে যায়। ফলে সাপ ডাঙ্গায়, শুকনো জায়গায় উঠে আসে। সেটা ক্ষেতের আইল, রাস্তা কিংবা আপনার ঘরের তোশকের তলা, বালিশের তলা, আলনার ভেতর, কাঠের স্তুপ যেকোন জায়গাতেই আসতে পারে।

৩। অন্ধকারে সাপের শরীরে পা পড়লে। জঙ্গলায় ভুলে তার শরীরে পা পড়লে কামড় দেয়।

৪। ইদুরের গর্তে সাপ থাকলে সেখানে পা রাখলে বা বসে থাকলে কামড় দিতে পারে। বাচ্চা ছেলেরা মাঝেমাঝে বসে গর্তের মুখে প্রস্রাব করে। সন্তানকে শিক্ষা দিন। এই কাজ যেন না করে।

সব সাপ বিষাক্ত?
বাংলাদেশে ৮০ ধরণের সাপ আছে। মাত্র ২৭ তা বিষাক্ত। অধিকাংশই সামুদ্রিক। মাত্র ৫/৬ প্রজাতি স্থলে আছে যারা বিষধর।
আপনার চোখের সামনে নিয়মিত যাদের ঘোরাফেরা দেখেন, তারা বিষাক্ত নয়। পানির সাপ অধিকাংশই বিষাক্ত নয়। তবে সামুদ্রিক সাপ সবাই বিষাক্ত।

যদি চেনেন তবে বলি গোখরা, কালকেউটে, শঙ্খচূড়, চন্দ্রবোড়া বিষাক্ত।

সাপে কাটলে বুঝবেন কীভাবে?

দংশন করেছে এমন মনে হবার পর যদি সরাসরি সাপ দেখেন, তাহলে ভাবতে পারেন সে আপনাকে দংশন করেছে।

একবার এক ছেলে হাসপাতালে আসল। মাটির ঘরে অন্ধকারে হেলান দিয়ে ছিল। পীঠে সাপ কেটেছে। সারাদিন হাসপাতালে আমাদের অবজারভেশনে ছিল। রাতে রিলিজের আগে খবর আসল, যেখানে হেলান দিয়ে ছিল, সেখানে কে যেন তারকাটা পুতে রেখেছিল। পীঠে লেগে তারকাটা দেয়ালে ঢুকে যায়। খোচা লাগাকে সাপে কাটা ভেবে সে হাসপাতালে আসে। ২৪ ঘণ্টা ভয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ঘরে ফেরে সুস্থ অবস্থায়।

বিষাক্ত সাপে কাটলে বোঝা বেশ সহজ।

১। শিকারি পশুর মত সাপের দুটো দাঁত বড় থাকে। বাঁকানো। দংশন করলে গভীর ক্ষত হয়। দুঁটো দাঁতের অস্তিত্ব থাকলে ধরে নিতে পারেন, আপনাকে বিষাক্ত সাপ দংশন করেছে।
২। যদি অনেকগুলো দাঁত থাকে, সেখানে মাংস তুলে নিলেও ভেবে নিতে পারেন এটা ছাগলের মত। অনেক দাঁত কিন্তু বিষদাঁত নাই। আপনার কিছু হবে না।

৩। সাপের বিষ কয়েক ধরণের। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে নিউরোটক্সিন রিলিজ করা সাপের কামড়ে। এক্ষেত্রে ঝিমঝিম লাগবে। চোখে ঝাঁপসা দেখবে। চোখের উপরের পাতা নেমে চোখ অংশিক বন্ধ হয়ে যাবে। মাথা ঝুলে যাবে। জিহ্বা ও শ্বাসনালী ফুলে যাবে। শ্বাস নিতে পারবে না। মুখে লালা ঝরবে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। বমি করতে পারে।

আরো নানাবিধ লক্ষণ আছে।
চন্দ্রবোড়া কামড় দিলে লোহিত রক্তকনিকা ভেঙ্গে যায়। ফলে রক্তবমি, রক্তপায়খানা হতে পারে। কামরের জায়গায় রক্ত ঝরতে পারে। ফুলে যেতে পারে, লাল হতে পারে। ফোস্কা পড়তে পারে। কালোও হতে পারে।
কিছু সাপের কামড়ে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারাও যেতে পারে।
মাঝেমাঝে নির্বিষ সাপ কামড়েও মানুষ মারা যায়।কেন জানে?
ভয় পেয়ে হার্ট অ্যাটাক করে।

সাপে কামড়ে সিনেমায় গড়াগড়ি দেখেন, বিষের কারণে চেঁচামেচি দেখেন। এগুলো অভিনয়। সাপের বিষ নিয়ে একটা প্রবাদ আছে, কেমন ব্যাথা বুঝিবে সে কীসে, কভু আশীবিষে দংশেনি যারে... এইসব ভুলে যান। সাপে কাটা মানুষ খুব স্বাভাবিক থাকে শুরুতে। কোন ব্যাথা নাও থাকতে পারে। এমনকী মৃত্যু ঘটার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত কোন ব্যাথা নাও বুঝতে পারে।

চিকিৎসা?
একদম ঘাবড়াবেন না। বেশি ঘাবড়ালেই বিষ বেশি ছড়াবে।
সাপেকাটা জায়গা ধুয়ে ফেলুন সাবান দিয়ে।
কাটবেন না ব্লেডে।
চুষে রক্ত বের করবেন, এমন চিন্তা ভুলে যান।
যেখানে কামড়াবে সেখানকার নাড়াচাড়া বন্ধ। হাতে কামড়ালে হাত নাড়ালে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে যায়। হাত একদম নাড়াবেন না। পায়ে কামড়ালে হাঁটবেন না।
সাপেকাটা স্থানে ভুলেও অ্যাসিড ঢালবেন না। মরিচের গুড়ো দিবেন না। কার্বলিক অ্যাসিডে ঝলসাবেন না। কোন ফলের বীজ, সর্পরাজ তেল, গুটি, আটি, বড়ি, তাবিজ কিছুই লাগাবেন না।

সাপটাকে পারলে চিনে রাখুন। ডাক্তারকে বললে চিকিৎসা পেতে সুবিধা হবে। তবে ধরে যাবেন না। মেরেও ফেলার দরকার নাই।
মৃত সাপকে ধরতে যাওয়াও নিরাপদ নয়। এরা মৃত্যুর ভান করে শুয়ে থাকতে পারে।

জীবিত ধরে ওঝার কাছে যাবেন, এমন চিন্তা থাকলেও ঝেড়ে ফেলুন। ওঝা সাপের বিষ নামাতে পারে না।

ওঝারা অনেক রোগী ভালো করে। যেগুলো আসলেই বিষাক্ত সাপের কামড় ছিল না। বিষাক্ত হলে একটা সময় বুঝতে পারে তখন নানা অজুহাত নাগ-নাগিনির কথা বলে এরা হাসপাতালে রোগী রেফার করে। আমরা হাসপাতালে অনেক পাই যারা একেবারে শেষ মুহুর্তে আসে। ওঝার কাছে গিয়ে জীবন খুইয়ে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি করে আসে।

বিষাক্ত সাপে কাটলে আপনি বাঁচতে পারেন একটামাত্র পথন অনুসরণ করলে। সেটা হল- দুনিয়ার কারো মতামত নিবেন না। সরাসরি হাসপাতাল যাবেন।

সাপে কাটলে এক সেকেন্ড সময় নষ্ট না করে সরকারি বড় হাসপাতালে যান। রাসেল ভাইপারভ বাদে সব সাপেরই বিষের অ্যান্টিভেনম আছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই চিকিৎসা শেষে ফিরে আসবেন। [রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে বিলুপ্ত সাপ। তবে রাজশাহীতে কয়েকবার নতুন করে পাওয়া গেছে। ফরিদপুরে পাওয়া গেছে কিছুদিন আগে। বন্যার জল-স্রোতে এরা আবার ছড়িয়ে পড়তে পারে দেশময়]

যদি বুঝে ফেলেন, সাপতা বিষধর নয়, তাহলে কী করবেন?

তবুও হাসপাতালে যাবেন। ভর্তি হয়ে প্রয়োজনে বিছানায় ২৪ ঘন্টা বসে থাকবেন। তবুও হাসপাতালে যাবেন।

[নোটঃ অধিকাংশ সাপই নির্বিষ। সাপ মারবেন না। সাপ বাস্তুতন্ত্রের অংশ। ঘরে সাপ পাওয়া গেলে স্নেক রেস্কিউয়ারকে জানাতে পারেন। ওঝাদের জানিয়ে পরিবেশ থেকে এসব সাপ বিলুপ্ত  করবেন না। ওঝারা সাপ মেরে পুড়িয়ে তেল বানায়। সেই তেল বাত ব্যাথা- সাপের বিষ নামানো, হারানো যৌবন পুনরুত্থান নামক নানাকিসিমের মিথ্যা চিকিৎসায় ব্যবহার করে। তাদের এই কাজ করতে দিবেন না। কারণ দিনশেষে সেই সাপের তেল হয়তো আপনার আত্মীয়ই কিনে নিয়ে ব্যবহার করছে]

কার্বলিক অ্যাসিডে সাপ পালায়?

সাপের ঘ্রাণ শক্তিই এত দূর্বল যে ফুলের গন্ধেও আসে না, তাহলে কার্বলিকে সাপ পালাবে কে বলল আপনাকে?
এসব সেইফটি এককালে প্রচলিত ছিল। এখন ব্যর্থ টোটকা।

বাড়িতে খড়ের গাদা, লাকড়ির স্তুপ থাকলে আপনার মা বা স্ত্রীকে সতর্ক করে দিন। খড় বা লাকড়ি নেবার আগে সেখানে লাঠি দিয়ে কিছুক্ষণ শব্দ করুন। সাপ থাকলে চলে যাবে।
রাতে বিছানা এমনকী বালিশের তলাও চেক করবেন। আলনার ভেতরে থাকতে পারে। শব্দ করে কাপড় নিতে যাবেন।

বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড় থাকলে কেটে ফেলুন। ঈদুরের গর্ত থাকলে ভরাট করে ফেলুন।
অনেকেই বলেন, মরিচপড়া দিয়ে ইদুরের গর্তের মুখে ধরলে সাপ চলে যায়। এ ব্যাপারে আমার জানা নাই। অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিতে পারেন।

বর্ষাকাল এসেছে। এখন সাপ আপনার বাড়িতে-ঘরে আশ্রয় নিতে আসতেই পারে। সাবধান থাকুন। অন্যদের সতর্ক করে রাখুন। গ্রামের আপন মানুষদের (বাবা-মা, বউ-বাচ্চা-বন্ধু) সাপের ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে রাখুন।
সতর্ক থাকবেন-ভয় পাবেন না-অবহেলা করবেন না।

-ডা. রাজীব হোসাইন সরকার

#178th_article
#22_days_left
#200_days_challenge

Programming languages and their uses

You can learn Python if you want to go in Artificial Intelligence (AI) or want to become a data scientist.

You can learn C++ if you want to make Software or game.

You can learn C if you want to make enterprise applications, games, Graphic User Interface (GUI), Compiler.

You can learn C# if you want to make windows applications, mobile applications, client-server applications and database applications.

You can learn Java or Kotlin if you want to make android application. Java also use to write AI programmes.

You can learn Swift if you want to make iOS application.

You can learn Java or PHP if you want to make websites.

You can learn SQL also if you want to be a database expert Because there are so many good Job as a Database expert or database designer or database analyst. Though SQL is not Programming Language but it has so much scope.

You can learn HTML, CSS, JavaScript. Though these are also not Programming Languages but you can make static and interactive website.

Friday, July 8, 2016

কোরআন শরীফে শব্দ ও আয়াতের পূণরাবৃত্তির রহস্য


শব্দ ও আয়াতের পূণরাবৃত্তির রহস্য
قرآن শরীফের سورة الفجر এর ৭ নং আয়াতে  إرامনামক একটি গোত্র কিংবা শহরের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু  إرامএর নাম কোনো ইতিহাসে পাওয়া যায় না। তাই قرآن শরীফের তাফসীরকারকরাও সুস্পষ্টভাবে এ শব্দটির অর্থ বলতে সক্ষম হননি।
১৯৭৩ সালে সিরিয়ার এরলূস নামক একটি পুরনো শহরে খনন কার্য চলাকালীন কিছু পুরনো লিখন পাওয়া গেছে। এ সমস্ত লিখন পরীক্ষা করে দেখা গেছে  إرامশহরের উল্লেখ আছে। এক সময়ে এরলূস অঞ্চলের লোকজন  إرامশহরের লোকজনের সংগে ব্যবসা-বাণিজ্য করত। এ সত্যটা আবিষ্কৃত হলো মাত্র সেদিন অর্থাৎ ১৯৭৩ সালে। প্রশ্ন হচ্ছে দেড় হাজার বছর আগে নাযিল করা قرآن শরীফে এই শহরের নাম এলো কি করে? আসলে قرآن শরীফ হচ্ছে الله تعالىর বাণী, আর الله تعالى এখানে  إرامশহরের উদাহরণ দিয়েছেন।
قرآن শরীফে হযরত মোহাম্মদ (স.) এর একজন দুশমনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সে হচ্ছে আবু লাহাব। ওহী নাযিল হওয়ার পর যদি আবু লাহাব ইসলাম কবুল করতো তাহলে قرآن শরীফের আয়াতটি মিথ্যা প্রমাণিত হতো, কিন্তু আবু লাহাব ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং قرآن শরীফের বাণী চিরকালের জন্য সত্য হয়েই রয়েছে।
قرآن শরীফে সূরা আর الروم এ পারস্য সাম্রাজ্য ধ্বংসের ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে এমনকি যে সময় ওহী নাযিল হয় তখন মানুষের পক্ষে বিশ্বাস করা অকল্পনীয় ছিল যে, রোমকদের যারা পরাজিত করলো তারা অচিরেই তাদের হাতে ধ্বংস হতে পারে, কিন্তু قرآن শরীফ এ বিষয়ে ভবিষ্যদ্বানী করেছে এবং তা এ আয়াত নাযিল হবার ৭ বছর সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ ৬২৭ খ্রিস্টাব্দে এসে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
এ আয়াতে فِى أَدْنَى الْاَرْضِ বলে الله تعالى গোটা ভূ-মণ্ডলের যে স্থানটিকে সর্বনিম্ন অঞ্চল বলেছেন তা ছিলো সিরিয়া, ফিলিস্তিন ও জর্দানের পতিত ডেড সী এলাকা। এ ভূখণ্ডেই ৬২৭ খ্রিস্টাব্দে রোমানরা ইরানীদের পরাজিত করে। মাত্র কিছুদিন আগে আবিষ্কৃত ভূ জরিপ অনুযায়ী এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই এলাকাটা সারা দুনিয়ার মধ্যে আসলেই নিম্নতম ভূমি। সী লেবেল থেকে ৩৯৫ মিটার নীচে। এ জায়গাটা যে গোটা ভূ-খণ্ডের সবচেয়ে নীচু জায়গা এটা ১৪শ বছর আগে মানুষ কি করে জানবে। বিশেষ করে এমন একজন মানুষ, যিনি ভূ-তত্ত্ব, প্রাণীতত্ত্ব ইত্যাদি কোনো তত্ত্বেরই ছাত্র ছিলেন না।
قرآن শরীফের এক জায়গায় সমুদ্রের তরংগ সম্বন্ধে বলা হয়েছে, ঢেউ যখন অগ্রসর হয় তখন দুটি ঢেউয়ের মধ্যবর্তী স্থান অন্ধকার থাকে। আমরা জানি হযরত মোহাম্মদ (স.) মরুভূমি অঞ্চলের সন্তান ছিলেন, তিনি সমুদ্র কখনো দেখেননি। সুতরাং সমুদ্র তরংগের দুটি ঢেউয়ের মধ্যবর্তী স্থান যে অন্ধকার হয় তা তিনি জানবেন কি করে? এতে প্রমাণিত হয়, হযরত মোহাম্মদ (স.) নিজে قرآن রচনা করেননি। আসলেই প্রচণ্ড ঝড়ের সময় সমুদ্র যখন বিক্ষুব্ধ হয় তখন দ্রুতগতিসম্পন্ন তরংগগুলোর মধ্যবর্তী অংশ সম্পূর্ণ অন্ধকারাচ্ছন্ন মনে হয়।
 قرآن এর আরেকটি বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, লোহা ধাতু বিবরণ।  قرآن এর سورة الحديدالله تعالى বলেছেন, আমি লোহা নাযিল করেছি যাতে রয়েছে প্রচুর শক্তি ও মানুষের জন্য প্রভূ কল্যাণ। লোহা নাযিলের বিষয়টি তাফসীরকারকরা নানাভাবে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন, কিন্তু যেখানে الله تعالىর নাযিল শব্দটি রয়েছে সেখানে এতো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে আমরা যদি  قرآن এর আক্ষরিক অর্থের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, আধুনিক বিজ্ঞানের উদ্ভাবনীও ঠিক একই কথা বলছে। পদার্থবিজ্ঞানীরা বলেন, লোহা উৎপাদনের জন্য ১৫ লক্ষ সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন তার কোনো উপকরণ আমাদের পৃথিবীতে নেই। এটা একমাত্র সূর্য এর তাপমাত্রা দ্বারাই সম্ভব। হাজার হাজার বছর আগে সূর্যদেশে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের ফলে লোহা নামের এ ধাতু মহাশূন্যে ছিটকে পড়ে। পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে তা পৃথিবীতে নাযিল হয়। লোহা সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত তথ্য ঠিক একথাটাই প্রমাণ করেছে। দেড় হাজার বছর আগের আরব বেদুইনরা বিজ্ঞানের এ জটিল সূত্র জানবে কি করে...
এই সূরার আরেকটি অংকগত মোজেযাও রয়েছে। ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী  سورة الحديد  যা قرآن এর ৫৭ তম সূরা। আরবীতে   سورة الحديدএর সংখ্যাগত মান হচ্ছে ৫৭। শুধু الحديدএর সংখ্যাগত মান ২৬, আর লোহার আণবিক সংখ্যার মানও হচ্ছে ২৬।
 قرآن এর অনেক জায়গায়ই একের সংগে অন্যের তুলনা উপস্থিত করা হয়েছে। এ তুলনা উপস্থিত করার ব্যাপারে একটি অবিশ্বাস্য মিল অবলম্বন করা হয়েছে এবং তা হচ্ছে, সে দু’টি নাম অথবা বস্তুকে সমান সংখ্যাতেই الله تعالى তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন। যেমন, قرآن শরীফে সূরা আলে ইমরান এর ৫৯ নং আয়াতে الله تعالى বলেছেন, الله تعالىর কাছে ঈসার তুলনা হচ্ছে আদমের মতো।
এটা যে সত্য তা আমরা বুঝতে পারি। কারণ, মানবজন্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এঁদের কারোরই জন্ম হয়নি। আদম (আঃ) এর মাতাও ছিলো না, পিতাও ছিলো না এবং ঈসা (আঃ) এরও পিতা ছিলো না। এখন এই তুলনাটি যে কতো সত্য তার প্রমাণ পাওয়া যায় যখন আমরা قرآن শরীফে এ দুটি নামের মোট সংখ্যা অনুসন্ধান করি। দেখা যাচ্ছে, قرآن শরীফে ঈসা (আঃ) নামটি যেমন ২৫ বার এসেছে, তেমনি আদম (আঃ) নামটিও এসেছে ২৫ বার।  قرآن এর বাণীগুলো যে মানুষের নয় তা বোঝা যায় এ দু’টি নামের সংখ্যার সমতা দেখে। الله تعالى যেহেতু বলেছ্নে, এ দুটো একই রকম। তাই সেগুলোর সংখ্যা গণনাও ঠিক একই রকমের রাখা হয়েছে।
এই তুলনার ক্ষেত্রে আরেকটি অলৌকিক বিষয় হলো, যেখানে তুলনাটি অসম সেখানে সংখ্যা দুটিকেও অসম বলা হয়েছে। যেমন,  قرآن এ বলা হয়েছে সুদ এবং বাণিজ্য এক নয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ শব্দ দু’টির একটি  قرآن এ এসেছে ৬ বার অন্যটি ৭ বার।
বলা হয়েছে, জান্নাতের অধিবাসী ও জাহান্নামের অধিবাসী সমান নয়। জান্নাতের সংখ্যা হচ্ছে ৮, আর জাহান্নামের সংখ্যা হচ্ছে ৭।
سورة أعراف এ এক আয়াতে আছে ‘যারা আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে কুকুরের মতো’। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেতে হয় যখন আমরা দেখি, যারা আমার সুস্পষ্ট আয়াতকে অস্বীকার করে’ এই বাক্যটি  قرآن এ সর্বমোট ৫ বার এসেছে। যেহেতু তাদের উদাহরণ দেয়া হয়েছে কুকুরের সাথে, তাই সমগ্র  قرآنالكلب তথা কুকুর শব্দটাও এসেছে ৫ বার।
سبع سموات কথাটির অর্থ হলো সাত আসমান। আশ্চর্য হলো,  قرآن এ এই সাত আসমান কথাটা ঠিক সাত বারই এসেছে। خلق السموات আসমানসমূহের সৃষ্টির কথাটাও ৭ বার এসেছে, সম্ভবত আসমান ৭টি তাই। سبعة أيام মানে ৭ দিন। একথাটাও  قرآن এ ৭ বার এসেছে।
অংকগত মোজেযা এখানেই শেষ নয়।
দুনিয়া ও আখেরাত এ দু’টো কথাও  قرآن এ সমান সংখ্যায় এসেছে, অর্থাৎ সর্বমোট ১১৫ বার করে।
 ঈমান ও কুফর শব্দ দু’টোও সমপরিমাণে বলা হয়েছে, অর্থাৎ ২৫ বার করে।
গরমও ঠাণ্ডা যেহেতু দু’টি বিপরীতমুখী ঋতু, তাই এ শব্দ দুটো সমান সংখ্যক অর্থাৎ ৫ বার করে এসেছে।
আরবী ভাষায় قل মানে বলা, তার জবাবে বলা হয় قالوا মানে তারা বললো। সমগ্র  قرآن এ ৩৩২ বার করে আছে।
মালাকুন কিংবা মালায়েকাহ ফেরেশতা কিংবা ফেরেশতারা।  قرآن এ এ শব্দটি এসেছে ৮৮ বার। একইভাবে ফেরেশতার চির শত্রু শয়তান কিংবা শায়াতীন এ শব্দটিও এসেছে ৮৮ বার।
الخبيث মানে অপবিত্র, الطيب মানে পবিত্র। সমগ্র  قرآن এ এ দু’টি শব্দ মোট ৭ বার করে, অর্থাৎ একই সংখ্যায় নাযিল হয়েছে।
প্রশ্ন জাগতে পারে দুনিয়ায় ভালোর চাইতে মন্দই তো বেশী, তাহলে এখানে এ দুটো শব্দকে সমান রাখা হলো কিভাবে। এ কথার জবাবের জন্যে  قرآن এর سورة الأنفال ৩৭ নম্বর আয়াতটির দিকে লক্ষ্য করা যাক। এখানে الله تعالى বলেছেন, অপবিত্রকে পবিত্র থেকে আলাদা করার জন্যে তিনি অপবিত্রকে একটার ওপর আরেকটা রেখে পুঞ্জীভূত করেন এবং সেগুলোকে জাহান্নামের আগুনে ফেলে দেন। এতে বুঝা যায়, যদিও পাপ পুণ্য’ সমান সংখ্যায় এসেছে, কিন্তু ‘পুঞ্জীভূত’ করা দিয়ে তার পরিমাণ যে বেশী তা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
يوم মানে দিন সমগ্র  قرآن এ এ শব্দটি ৩৬৫ বার উল্লেখ করা হয়েছে। বছরে যে ৩৬৫ দিন, এটা কে না জানে। يوم শব্দের বহুবচন أيام মানে দিনসমূহ, এ শব্দটি এসেছে ৩০ বার। আরবী ভাষায় চাঁদ হচ্ছে মাসের সূত্র সূচক। গড়ে বছরের প্রতি মাসে ৩০ দিন, এটাই হচ্ছে চন্দ্রবছরের নিয়ম। হতবাক হতে হয় যখন দেখি, চাঁদের আরবী প্রতিশব্দ قمر শব্দটি  قرآن এ ৩০ বারই এসেছে
شهر মানে মাস, قرآن মাজীদে এ শব্দটি এসেছে মোট ১২ বার। سنة মানে বছর,  قرآن এ এ শব্দটি এসেছে ১৯ বার। কারণ হিসেবে আমরা সম্প্রতি আবিষ্কৃত গ্রীক পণ্ডিত মেতনের ‘মেতনীয় বৃত্তের’ কথা উল্লেখ করতে পারি। তিনিই প্রথম এ তত্ত্বটি আবিষ্কার করেন যে, প্রতি ১৯ বছর পর সূর্য ও পৃথিবী একই বৃত্তে অবস্থান করে।
 قرآنفُجّارٌ (পাপী) শব্দটি যতবার এসেছে, أبرار (পুণ্যবান) শব্দটি তার দ্বিগুণ এসেছে। অর্থাৎ فُجّار ৩ আর أبرار ৬ বার এসেছে। এর কারণ হচ্ছে শাস্তির তুলনায় পুরষ্কারের পরিমাণ الله تعالى দ্বিগুণ দিবেন বলে ওয়াদা করেছেন।  قرآن এর سورة سبإٍ ৩৭ নং আয়াতে الله تعالى বলেছেন এ ধরনের লোকদের জন্যই (কেয়ামতে) দ্বিগুণ পুরষ্কারের ব্যবস্থা থাকবে। এটা হচ্ছে বিনিময় সে কাজের যা তারা দুনিয়ায় করে এসেছে’। এ কারণেই দেখা যায় গোটা  قرآن এ পাপী ও পুণ্যবান শব্দের মতো عذاب শব্দটি যতবার এসেছে, ثواب শব্দটি তার দ্বিগুণ এসেছে। অর্থাৎ عذاب ১১৭ বার, ثواب ২৩৪।
 قرآن এ একাধিক জায়গায় الله تعالى বলেছ্নে, আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করলে তিনি তার বিনিময় বাড়িয়ে দেবেন। সম্ভবত এ কারণেই  قرآن এ গরীবী শব্দটি এসেছে ১৩ বার, আবার তার বিপরীতে প্রাচুর্য শব্দটি এসেছে ২৬ বার।
 قرآن এ কারীমের বিভিন্ন জায়গায় এভাবে গাণিতিক সংখ্যার অদ্ভূত মিল দেখে  قرآن এর যে কোনো পাঠকই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবতে থাকে, এটা নিঃসন্দেহে কোনো মানুষের কথা নয়।
কোনো একটি কাজ করলে তার যে অবশ্যম্ভাবী ফল দাঁড়াবে তার উভয়টিকে আশ্চর্যজনকভাবে সমান সংখ্যায় বর্ণনা করা হয়েছে। ‘গাছের চারা উৎপাদন করলে গাছ’ হয়। তাই এ দু’টো শব্দই এসেছে ২৬ বার করে। কোনো মানুষ হেদায়েত পেলে তার প্রতি রহমত বর্ষিত হয়। তাই এ দুটো শব্দ  قرآن এ এসেছে ৭৯ বার করে। হায়াতের অপরিহার্য পরিণাম হচ্ছে মওত। এ শব্দ দুটোও এসেছে ১৬ বার করে। الله تعالى বলেছেন যাকাত বরকত আসে, তাই  قرآن এ কারীমে যাকাত শব্দ এসেছে ৩২ বার, বরকত শব্দও ৩২ বার এসেছে। আবদ মানে গোলামী, আর আবীদ মানে গোলামগোলামের কাজ গোলামী করা, তাই  قرآن এ এই উভয় শব্দই এসেছে ১৫২ বার করে। ‘মানুষ সৃষ্টি কথাটা এসেছে ১৬ বার, আর মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে এবাদাত সুতরাং তাও এসেছে ১৬ বার। ‘নেশা’ করলে ‘মাতাল’ হয়, তাই এ দুটো শব্দও এসেছে ৬ বার করে।
আর মাত্র দুটো মোজেযা বলে আমরা ভিন্নদিকে অগ্রসর হব।
 قرآنإنسان শব্দটি এসেছে ৬৫ বার, এবার إنسان বানানোর উপকরণগুলোকে  قرآن এর বিভিন্ন জায়গা থেকে যোগ করে মিলিয়ে দেখা যাক। প্রথম উপাদান تراب (মাটি) এসেছে ১৭ বার, দ্বিতীয় উপাদান نطفة (জীবনকণা) এসেছে ১২ বার, তৃতীয় উপাদান علق (রক্তপিন্ড) এটি এসেছে ৬ বার, চতুর্থ উপাদান مضغة (মাংসপিন্ড) এটি এসেছে ৩ বার। পঞ্চম উপাদান হচ্ছে عظام (হাড়), এটি এসেছে ১৫ বার। সর্বশেষ উপাদান হচ্ছে لحم (গোশত), এ শব্দটি এসেছে ১২ বার।  قرآن এ উল্লিখিত ( سورة الحج) এ উপাদানগুলো যোগ করলে যোগফল হবে ঠিক ৬৫। আর এসব উপাদান নিয়ে যে إنسان বানানো হয়েছে তাও ঠিক ৬৫ বার উল্লেখ করা হয়েছে।
الله تعالى قرآن এর سورة القمر এর প্রথম যে আয়াতটিকে চাঁদ বিদীর্ণ হওয়ার সাথে কেয়ামতের আগমন অত্যাসন্ন কথাটি বলেছেন, আরবী বর্ণমালার আক্ষরিক মান হিসাব করলে তার যোগফল হয় ১৩৯০, আর এই ১৩৯০ হিজরী (১৯৬৯ খৃস্টাব্দ) মানুষ সর্বপ্রথম চাঁদে আবতরন করে, জানি না এটা  قرآن এর কোনো মোজেযা, না তা এমনিই এক ঘটনাচক্র, কিন্তু الله تعالىর এই মহান সৃষ্টিতে তো ঘটনাচক্র বলতে কিছুই নেই। এ কারণেই হয়ত মানুষের চাঁদে অবতরণের সাথে  قرآن এর আলোচ্য আয়াতটির সংখ্যামানের এই বিস্ময়কর মিল আমরা দেখতে পাচ্ছি।